Admission
পদার্থবিদ্যা - পদার্থবিজ্ঞান – ২য় পত্র - ইনট্রিন্সিক ও এক্সট্রিন্সিক সেমিকন্ডাক্টর

ইলেকট্রন ও হোলের ধারণা

ইলেকট্রন হলো ঋণাত্মক তড়িৎবাহী একটি মৌলিক কণা। এর আধানের মান 1.6 x 10-19C এবং ভর 9.1 x 10-31 kg. এগুলো পরমাণুর কেন্দ্রের বহিস্থ কক্ষপথে আবর্তন করে। উপযুক্ত শক্তি প্রয়োগ করে ইলেকট্রনকে কক্ষভ্রষ্ট করা যায় বা কক্ষ থেকে বের করে নেয়া যায়।

হোল হলো কোনো কঠিন পদার্থের ল্যাটিস কাঠামোতে ইলেকট্রনের খালি করা অবস্থান যা চলমান ধনাত্মক আধান বাহক হিসাবে আচরণ করে। কোনো সেমিকন্ডাক্টর পদার্থের কোনো কক্ষে স্থায়ী ঘূর্ণায়মান ইলেকট্রন কোনো কারণে মুক্ত হয়ে গেলে সেখানে শূন্যতার সৃষ্টি হয়। এরই নাম হোল (Hole)। অন্য কোনো কক্ষ থেকে ইলেকট্রন এসে এই শূন্যস্থান দখল করলে ইলেকট্রন প্রদানকারী কক্ষও আবার ইলেকট্রন শূন্য হয়ে পড়ে এবং তড়িৎ পরিবহন ঘটে। ফলে একটি ধনাত্মক আধানের মতো ভূমিকা পালন করে হোল সমগ্র পদার্থের মধ্য দিয়ে গমন করেন।

সেমিকন্ডাক্টরের প্রকারভেদ (Classification of Semiconductor)

সেমিকন্ডাক্টর সাধারণত দুই ধরনের হয়। যথা—

(১) ইনট্রিন্সিক বা অন্তর্জাত সেমিকন্ডাক্টর (Intrinsic semiconductor) 

(২) এক্সট্রিন্সিক বা বহির্জাত সেমিকন্ডাক্টর (Extrinsic semiconductor)

   ইনট্রিন্সিক বা অন্তর্জাত সেমিকন্ডাক্টর : 

যে সকল সেমিকন্ডাক্টরে কোনো অপদ্রব্য মেশানো হয় না তাদেরকে ইনট্রিন্সিক বা অন্তর্জাত সেমিকন্ডাক্টর বলে। পর্যায় সারণির চতুর্থ সারির পরমাণু কেলাস যেমন, কার্বন (C), সিলিকন (Si), জার্মেনিয়াম (Ge), টিন (Sn) এ সকল পদার্থে মুক্ত ইলেকট্রনের সংখ্যা বেশ কম। ফলে এদের পরিবাহিতাঙ্ক খুব বেশি নয়।

   এক্সট্রিন্সিক বা বহির্জাত সেমিকন্ডাক্টর : 

অন্তর্জাত সেমিকন্ডাক্টরে অতিসামান্য অপদ্রব্য নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে (প্রায় এক কোটি পরমাণুতে একটি পরমাণু) মেশালে এতে বিপুল পরিমাণে মুক্ত ইলেক্ট্রন বা হোল সৃষ্টি হয়। ফলে এর পরিবাহিতা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। অপদ্রব্য মেশানো সেমিকন্ডাক্টরকে এক্সট্রিপিক বা বহির্জাত সেমিকন্ডাক্টর বলে। পরিবাহিতা বৃদ্ধির জন্য বিশুদ্ধ সেমিকন্ডাক্টরে অপদ্রব্য মেশানোকে ডোপায়ন বা ডোপিং (doping) বলে। ডোপায়নের জন্য দুই ধরনের অপদ্রব্য ব্যবহার করা হয় :

(ক) পর্যায় সারণির তৃতীয় সারির মৌল, যেমন : বোরন (B), এলুমিনিয়াম (Al), গ্যালিয়াম (Ga), ইন্ডিয়াম ( In ) । 

(খ) পর্যায় সারণির পঞ্চম সারির মৌল, যেমন : ফসফরাস (P), আর্সেনিক (As), এন্টিমনি (Sb), বিসমাথ (Bi) ।

এক্সট্রিন্সিক বা বহির্জাত সেমিকন্ডাক্টর দুই ধরনের হয়, যথা : p টাইপ এবং n টাইপ। ডোপিত মৌলের প্রকৃতি থেকে নির্ধারিত হয় সেমিকন্ডাক্টরটি p টাইপ (ধনাত্মক টাইপ) হবে, না n টাইপ (ঋণাত্মক টাইপ) হবে।

Content added By